গাজীপুর প্রতিনিধি :
গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী থাকা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নারী নেত্রীদের ওপর অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোছাঃ কাওয়ালিন নাহার এবং জেলার রিজিয়া বেগমের বিরুদ্ধে সরাসরি নির্দেশনার অভিযোগ আনা হয়েছে, যা নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই অভিযোগ প্রথম ছড়িয়ে পড়লেও অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর কাশিমপুর মহিলা কারাগারে আনা বেশ কয়েকজন নারী নেত্রীর ওপর পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন চালানো হয়। কারাগারের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, সিনিয়র জেল সুপার কাওয়ালিন নাহারের নির্দেশে চুমকি নামের এক সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক বন্দীদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হতো। অভিযোগ রয়েছে, চুমকিকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে এই ঘৃণ্য কাজে ব্যবহার করা হয়।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, নির্যাতনের মাত্রা বাড়াতে সিনিয়র জেল সুপার কাওয়ালিন নাহার কারাগারের বাইরে থেকে অতিরিক্ত ফোর্স ডেকে এনে নারী নেত্রীদের ওপর লাঠিচার্জ করান। এসময় তাদের সেলে পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে এক অমানবিক পরিস্থিতি তৈরি করা হয় বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
একইভাবে, জেলার রিজিয়া বেগমের বিরুদ্ধেও বন্দীদের ওপর সরাসরি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে অংশ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তাকে ঘটনার অন্যতম মূলহোতা হিসেবে উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকে।
এই অভিযোগগুলো প্রকাশ্যে আসার পর থেকে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও রাজনৈতিক মহল তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে এ বিষয়ে দ্রুত বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে।
তবে, এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অভিযুক্ত সিনিয়র জেল সুপার মোছাঃ কাওয়ালিন নাহার, জেলার রিজিয়া বেগম কিংবা কারা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কারাগারের মতো একটি সুরক্ষিত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের অভিযোগের ফলে এর নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।