1. fakiraual842@gmail.com : নব দিগন্ত ২৪ : নব দিগন্ত ২৪
  2. rmriyad150@gmail.com : fokir :
  3. nobodigonto24.khag.dist.repse@gmail.com : Md. Mobinul Islam : Md. Mobinul Islam
ডিমলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিম্নমানের খাবার সরবরাহঃ রোগীদের দুর্ভোগ - নব দিগন্ত ২৪
শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ১১:২৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
“প্রিয় সলঙ্গার গল্প” গ্রুপের চলনবিল নৌকা ভ্রমণ রাজারবাগস্থ বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ব্যস্ত সড়ক পরিহার করে বিকল্পস্থানে সভা-সমাবেশ করার অনুরোধ ডিএমপি কমিশনারের সেনাবাহিনীর অফিসার পরিচয় দিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণঃ প্রতারককে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সানারপাড় এলাকা থেকে গ্রেফতার ও আলামত উদ্ধার বগুড়ায় মোনায়েম কোম্পানির অবহেলায় প্রাণ গেল এক নারীর বিএনপি চেয়ারপার্সনের জন্মবার্ষিকীতে বগুড়ায় ছাত্রদলের প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন ডিমলায় দীর্ঘদিন পর মসজিদের জমি উদ্ধার খুলনা নগরীর সাতরাস্তা মোড়ে নূর কাচ্চি হাউজের চোরাই মালামালসহ দুই চোর আটক যশোর বেনাপোলে সৃজন শিখার শুভ উদ্বোধন করলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী নাজিব হাসান সাতক্ষীরায় ডুমুরিয়ার আঠারোমাইল এলাকায় যুবদল নেতাকে জবাই করে হত্যা আটক ২ কালীগঞ্জে বিভিন্ন মসজিদের ইমাম,খতিব মাদ্রাসার সুপার ও অধ্যক্ষদের সাথে বিএনপি’র মতবিনিময়

ডিমলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিম্নমানের খাবার সরবরাহঃ রোগীদের দুর্ভোগ

মামুন
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৭৫ বার পড়া হয়েছে

মোঃমামুন নীলফামারী প্রতিনিধি

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে মেসার্স শিরিন ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে খাবার সরবরাহের দায়িত্ব দেওয়া হলেও রোগীদের অভিযোগ, খাবারের মান অত্যন্ত খারাপ এবং পরিমাণেও কম।

সরেজমিনে হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, প্রবেশমুখেই ময়লা আবর্জনার স্তূপ। শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অনুপযুক্ত, যেখানে কিলবিল করছে কীট। মেজে ও দেয়ালে দেখা যায় পানের পিক। যত্রতত্র পড়ে রয়েছে ব্যবহৃত স্যালাইনের সরঞ্জাম ও ওষুধের কার্টুন। সব মিলিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির পরিবেশ নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত, যা চিকিৎসা গ্রহণের জন্য একেবারেই অনুপযুক্ত।

অভিযোগ উঠেছে, মেসার্স শিরিন ট্রেডার্স নামক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি কাগজে-কলমে দায়িত্ব পেলেও মূলত উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) ডাঃ মো. রাশেদুজ্জামান এর নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, ইজিপি টেন্ডারে চার নম্বরে থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র স্বাস্থ্য কর্মকর্তার যোগসাজশে এই কাজটি বাগিয়ে নিয়েছে উক্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এতে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা গচ্ছা যাচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে।

হাসপাতালে প্রতিদিন সকালে রোগীদের দুইটি পাউরুটি, একটি সিদ্ধ ডিম ও এক চামচ চিনি দেওয়া হয়। দুপুরে দেওয়া হয় ৭.৫০ গ্রাম ওজনের সিলভারকাপ মাছ, ১০০ গ্রাম মোটা চালের ভাত, ডাল ও ভাজি মেশানো তরকারি। রাতে প্রায়শই দুপুরের অবশিষ্ট খাবার সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে। অথচ টেন্ডারের শর্ত অনুযায়ী, সপ্তাহে চার দিন মাছ এবং দুই দিন মাংস দেওয়ার কথা।

সরকারি বরাদ্দ অনুযায়ী, প্রাপ্তবয়স্ক রোগীর প্রতিদিনের খাবারের জন্য ১৭৫ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। যেখানে সকালে দুইটি পাউরুটি, দুইটি সিদ্ধ ডিম, একটি কলা ও ২০ গ্রাম চিনি; দুপুরে ও রাতে ১০০ গ্রাম মাছ, ২০০ গ্রাম ভাত, ২০ গ্রাম ডাল এবং পরিমাণ মতো সবজি দেওয়ার কথা। তবে ভুক্তভোগী রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, সরবরাহ করা হচ্ছে সিলভারকাপ, বার্মিজ রুই, তেলাপিয়া মাছ এবং মোটা চালের ভাত। অনেক সময় পচা ও বাসি তরকারি এবং পরিমাণেও কম খাবার পরিবেশন করে ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

এ বিষয়ে একাধিকবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো ফল হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন রোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।

সম্প্রতি নব দিগন্তের প্রতিনিধির সাথে কথা হয় কয়েকজন রোগীর। উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের ডাঙ্গারহাট এলাকার বকুল নামের এক রোগী জানান, “চার দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি। পাতলা ডাল দেয়। মাছ মাংসে ঝাল বা মসলার কোনো স্বাদ নেই। আর যে ভাত দেয়, তা গলা দিয়ে নামে না।”

খগাখরিবাড়ী ইউনিয়নের টুনিরহাট এলাকার মহিলা ওয়ার্ডের ১১ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন নুরজাহান বেগম বলেন, “খাবারে কোনো স্বাদ বা ঘ্রাণ নেই। মসলার চিহ্নও নেই। দুপুরের খাবার কোনোমতে খাওয়া গেলেও রাতের খাবার মুখে তোলা যায় না।”

বালাপাড়া সুন্দরখাতা গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা মুনতাহানা বেগম মহিলা ওয়ার্ডের ১৩ নম্বর বেডে শুয়ে বলেন, “বাবা যে ভাত দেয়, পেট ভরে না। আরও চাইলে দেয় না। ক্ষুধ নিয়েই থাকতে হয়। চিকিৎসা করাতে এসেছি, টাকা তো আর নেই যে বাইরে থেকে কিনে খাবো।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, খাবার খাওয়ার অযোগ্য হওয়ায় বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে খাবার কিনতে হচ্ছে। এছাড়াও, খাবার সরবরাহও দেরিতে হচ্ছে। প্রায়শই সকাল ৮টার পরিবর্তে ১০টা থেকে ১০:৩০ টার মধ্যে খাবার আসে। এমনকি অনেক সময় খাবারের মানও ঠিক থাকে না।

উপজেলা খালিশা চাপানি ইউনিয়নের বাইশ পুকুর গ্রামের আব্দুল জলিল মন্ডল, যিনি তিন দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি, তিনি নব দিগন্তকে বলেন, “সকালে দুইটা বাসি পাউরুটি আর একটু চিনি দিয়েছিল, যা খাওয়া যায়নি। দুপুরে অল্প ভাত আর আধ পিস মাছ দিয়েছিল, সাথে তরকারিও ছিল। মাছ অপরিষ্কার থাকায় ফেলে দিয়েছি। রাতের খাবার মুখে দেওয়া যায় না। আর দিলেও তা পচা-গন্ধযুক্ত ও কাঁকর মেশানো থাকে, যা খাওয়ার অযোগ্য।”

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একাধিক কর্মচারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কাগজে কলমে মেসার্স শিরিন ট্রেডার্স থাকলেও মূল ক্ষমতা ডাঃ মো. রাশেদুজ্জামানের হাতে। বারবার বলা সত্ত্বেও খাবারের মানের কোনো উন্নতি হয়নি। ভয়ে মুখ খুলতে পারেন না সাধারণ কর্মচারীরা।

এ বিষয়ে খাদ্য সরবরাহকারী শাহিনুর ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মো. রাশেদুজ্জামানের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।

তবে নীলফামারীর সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হবে এবং সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© নব দিগন্ত ২৪
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট