মোঃ মুবিনুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:
নিহত শিক্ষার্থীদের স্মরণে নিরবতা, মেধাবীদের স্বীকৃতিতে অনুপ্রেরণার বার্তা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাস্তবায়িত “পারফরমেন্স বেজড গ্র্যান্টস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউশনস (SEDP)” স্কিমের আওতায় খাগড়াছিরি জেলার পানছড়ি উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান।
বুধবার (২২ জুলাই), উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্ব অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ক্রেস্ট ও সনদপত্র।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই দিয়াবাড়ীতে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয় এবং তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পানছড়ি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, পানছড়ি প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সম্পাদকসহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
সভাপতিত্ব করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অরূপ চাকমা এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহকারী শিক্ষক সুলতান মাহমুদ (পুজগাং মুখ উচ্চ বিদ্যালয়)।
জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, “এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অকাল মৃত্যু আমাদের হৃদয়বিদারক করে তুলেছে। শিক্ষা জীবনের শুরুতেই এমন করুণ পরিণতি সত্যিই কল্পনাতীত। তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। শিক্ষা পরিবার হিসেবে আমরা সবসময় তাঁদের পাশে আছি।”
তিনি আরও বলেন, এই দুর্ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবন কতটা অনিশ্চিত। আমাদের আরও মানবিক হতে হবে, সহানুভূতিশীল হতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের স্বপ্নপূরণে পাশে দাঁড়াতে হবে।”
পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের চোখে-মুখে ছিল আনন্দ ও অঙ্গীকারের ছাপ। তারা জানায়, এই স্বীকৃতি তাদের আরও মনোযোগী করে তুলবে এবং ভবিষ্যতে দেশ ও সমাজের জন্য কিছু করতে অনুপ্রাণিত করবে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন- “শুধু ভালো ফল করলেই হবে না, সেই সাফল্যকে ধরে রাখতে হবে আত্মনিয়োগ ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে। আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব তোমাদের হাতেই।”
শিক্ষক-অভিভাবকরাও শিক্ষার্থীদের মানসিক ও নৈতিক বিকাশে পারিবারিক ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
পুরো আয়োজনটি শুধু পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান ছিল না; এটি ছিল এক আবেগঘন সম্মিলন। যেখানে একদিকে ছিল শ্রদ্ধা ও শোক, অন্যদিকে ছিল স্বীকৃতি ও অঙ্গীকার। নিহতদের স্মরণ এবং মেধাবীদের সম্মান যেন একত্রে বলে গেল—
জীবন ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু শিক্ষা ও মানবতা চিরন্তন।