আতিকুর রহমান,, স্টাফ রিপোর্টার: বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশের এক সদস্যকে কাফনের কাপড় ও চিরকুট পাঠিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে অজ্ঞাতনামা দূর্বৃত্ত। মঙ্গলবার রাতে কাফনের কাপড় ও চিরকুট পাঠিয়ে এ হুমকি দেয়া হয়। এতে করে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন গ্রাম পুলিশের সদস্য রামচন্দ্র (৫৫) ও তার পরিবার পরিজন। তারা বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। জানা গেছে,আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের সান্দিড়া গ্রামের ঋষিপাড়ার বাসিন্দা রামচন্দ্র ২০০০ সালে উপজেলার সান্তাহার পৌরসভা শহরে অবস্থিত বগুড়া জেলা সিএনজি ও অটোপেম্পু মালিক সমিতিতে সচিব পদে চাকরি নেয়। এরপর ২০০৯ সালে হয় গ্রাম পুলিশের চাকরি। গ্রাম পুলিশের চাকরিতে কর্ম এলাকা হয় ইউনিয়নের বামনিগ্রাম গ্রামে। চাকরিরত অবস্থায় রামচন্দ্র বামনিগ্রাম গ্রামের জনৈক গোলাপি বানু নামের এক নারীর প্রেমে পড়ে। পরে ২০২০ সালে রামচন্দ্র তার প্রেমিকা গোলাপির কিছু শর্ত মেনে নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে। এর এক বছর পর নানান বিষয় নিয়ে উভয়ের মধ্যে মতের অমিল দেখা দেয়। এই অবস্থায় রামচন্দ্র ২০২১ সালে মুসলিম ম্যারেজ রেজিস্ট্রার কল্যাণ সমিতিতে তালাক প্রদান করেন। তালাক নোটিশ পাওয়ার পর থেকে গোলাপী বানু ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে রামচন্দ্রের উপর। চলতি বছরের ২৬ জুন হঠাৎ করে মোবাইল ফোনে গোলাপী বানু অকথ্য ভাষায় তাকে গালিগালাজ ও বিভিন্ন প্রকার হুমকি ধামকি দেন। এর দুই দিন পর কয়েকজন কথিত সাংবাদিক ও ইউনিয়নের এক মেম্বার নিয়ে গঠিত ধাঁন্দাবাজ দল গোলাপি বানুকে নিয়ে রামের গ্রামের বাড়িতে যায় এবং তাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে রামচন্দ্রকে চাপ প্রয়োগ করে। স্ত্রী হিসাবে মেনে না নিলে নগদ তিন লাখ টাকা দিয়ে মিটমাট করার দাবী করে। কিন্তু রামচন্দ্র তাদের দাবী অস্বিকার করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা রামের বাড়িতে হামলা চালিয়ে মারপিট, ভাংচুর ও লুটপাট করে। এই ঘটনার পর দিন রামচন্দ্র আইনশৃংখলা বাহিনীর নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এর ফলে চরম বেকায়দায় পড়ে ধাঁন্দাবাজরা। তারা দফায় দফায় গোপন বৈঠক করে রামচন্দ্রকে আপোষ মিমাংশা করার জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু রামচন্দ্র আপোষ মিমাংশা না করা বিষয়ের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। এমন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতের কোন এক সময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা ব্যাগে করে কাফনের কাপড় ও একটি চিরকুট রেখে যায় ওই মালিক সমিতি কার্যালয়ের বারান্দায়। ওই চিরকুটে “রাম শোন, সত্য মিথ্যা জানি না। আগামী দুই দিনের মধ্যে বামনিগ্রামের গোলাপি বানুর টাকার বিনিময়ে সব মিটমাট করবে। না হলে সিএনজি অফিসের সচিব পদ আর গ্রাম পুলিশের চাকরি হারাবে। তবুও যদি না মানো তাহলে তুমিসহ তোমার সহযোগীরা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকো। এই কাফনের কাপড় তোমার সঠিক সিদ্ধান্তের জন্য উপহার” লেখা রয়েছে। এবিষয়ে মোবাইল ফোনে রামচন্দ্র জানান, সান্তাহার ফাঁড়ির পুলিশ আলামত জব্দ করে নিয়ে গেছেন। এঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করার প্রস্তুতি চলছে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী গ্রাম পুলিশ সদস্য রামচন্দ্র।