বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা:
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ও রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার সংঘটিত এই আগুনে শত শত কোটি টাকার পণ্য পুড়ে ছাই হয়ে গেলেও, একটি নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা সূত্র এই ঘটনাকে নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড বলে দাবি করেছে।
শনিবার বেলা সোয়া ২টার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের অক্লান্ত পরিশ্রমে প্রায় সাত ঘণ্টা পর রাত ৯টা ১৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অগ্নিকাণ্ডের কারণে কয়েক ঘণ্টা উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকলেও রাত ৯টার পর থেকে ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা ও গাফিলতির অভিযোগ:
প্রত্যক্ষদর্শী ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতি ও নিষ্ক্রিয়তার কারণে আগুনের ভয়াবহতা বহুগুণ বেড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, আগুন লাগার পর প্রায় দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত তা একটি নির্দিষ্ট স্থানে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা "সিভিল এভিয়েশনের অনুমতি নেই" এই অজুহাতে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে বিলম্ব করে। এমনকি যখন কাজ শুরু হয়, তখন তারা ভেতরে প্রবেশ না করে বাইরে থেকে পানি ছিটাতে থাকে, যা আগুন নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি।
গোয়েন্দা সূত্রের চাঞ্চল্যকর দাবি:
এই ঘটনাকে ঘিরে একটি নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা সূত্র এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে। সূত্রটি নিশ্চিত করেছে যে, এই অগ্নিকাণ্ড একটি পরিকল্পিত নাটক এবং এর পেছনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাত রয়েছে।
সূত্রটির দাবি, "নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে বিদেশিদের হাতে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তুলে দেওয়ার একটি চুক্তি রয়েছে। ড. ইউনূসের ক্ষমতা গ্রহণের আগেই এই চুক্তি সম্পন্ন হয়। সেই চুক্তি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের নেতৃত্বে এই আগুন লাগানো হয়েছে, যাতে বিমানবন্দর ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতা ও নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি সামনে এনে বিদেশি হস্তক্ষেপের পথ সুগম করা যায়।"
এই দাবির ফলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি নতুন মোড় নিয়েছে। নিছক দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত অন্তর্ঘাত— এই প্রশ্ন এখন সর্বত্র আলোচিত হচ্ছে।
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ:
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, আগুনে ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, তৈরি পোশাক শিল্পের ফেব্রিকস, উপহার সামগ্রীসহ বিপুল পরিমাণ মূল্যবান পণ্য পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হাজার হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও এই ঘটনাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন ও ষড়যন্ত্রের গুঞ্জন। একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মতো স্পর্শকাতর স্থানে এমন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড এবং এর পেছনের অন্তর্ঘাতের অভিযোগ দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত রহস্য উন্মোচনের দাবি জানিয়েছে সব মহল।