মোঃমামুন (ডিমলা)নীলফামারী প্রতিনিধি
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা খালিশা চাপানি ইউনিয়নে তিস্তা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে প্রতিনিয়ত নিঃস্ব হচ্ছে অসংখ্য পরিবার। নদীর ভয়াবহ স্রোত একের পর এক গ্রাস করে নিচ্ছে বসতবাড়ি, গবাদিপশু খামার, কৃষিজমি, সবুজ বাগান আর জীবনের শেষ সঞ্চয়। অথচ এখনো পর্যন্ত নেওয়া হয়নি কার্যকর কোনো ব্যবস্থা।
স্থানীয় কৃষক আব্দুর রহিম রানা বলেন,”আমার এনজিও থেকে লোন নিয়ে গরুর খামার করেছিলাম। খামারটা এখন নদীর পেটে চলে গেছে। আমার ভিটেটাও আর নেই। কী করবো এখন?”তার স্ত্রী শারমিন আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান,
“তিনবার ঘর বানিয়েছি, তিস্তা তিনবারই কেড়ে নিয়েছে। এবার যদি পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমার মতো হাজারো মানুষ পথে নামবে। আমরা আর পারছি না, বাঁচতে চাই।”
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হলেও ভাঙনরোধে স্থায়ী পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকাবাসী।”আমরা ত্রাণ চাই না। আমরা চাই নবীর শাসনের মতো ন্যায়ভিত্তিক ব্যবস্থা। চাই টেকসই বাঁধ, নদীশাসন। যাতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আর নদীর তাণ্ডবে সব হারাতে না হয়।”
এলাকার প্রবীণ কৃষক মজিবর রহমান বলেন,কোনো এক সময় আমরা ছিলাম কোটিপতি। জমি ছিল, গরু ছিল, বাড়ি ছিল। আজ আমরা রাস্তায়, শুধু তিস্তার ভাঙনের কারণে। সরকার যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এই ক্ষতি আর কখনো পূরণ হবে না।এলাকাবাসীর দাবি—
ডালিয়া ব্যারাজ ও তিস্তা নদীর পাড়ে জরুরি ভিত্তিতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।তিস্তা নদী শাসনের প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন ও ঋণ মওকুফের ব্যবস্থা করতে হবেভাঙন এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে সেনাবাহিনী বা পানি উন্নয়ন বোর্ডের হস্তক্ষেপ দরকার
বিগত কয়েক বছরের ভাঙনের চিত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, প্রতিবার বর্ষা মৌসুম এলেই এ এলাকাটি নদীগর্ভে বিলীন হতে থাকে। অথচ রাজনৈতিক নেতাদের প্রতিশ্রুতি থেকে শুরু করে কর্মকর্তাদের আশ্বাস, সবই থেকে যাচ্ছে কাগজে-কলমে।স্থানীয়রা বলেন,আমাদেরকে ত্রাণ দিয়ে শান্ত করতে চাইলে চলবে না, আমাদের ভবিষ্যৎ বাঁচানোর জন্য এখনই কাজ করতে হবে। তিস্তার ভাঙনে যদি কোনো শিশুর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়, তার দায় কেম নেবে?তিস্তার ভাঙনে যখন শত শত পরিবার পথে বসছে, তখন আর সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই। স্থানীয় জনগণ এখন আর সাহায্য নয়, টেকসই সমাধান চায়। মানবিকতা, উন্নয়ন ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে এখনই পদক্ষেপ জরুরি।
এবিষয় ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন,জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করতে বলেন