স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকায় যুবদল নেতা কর্তৃক ব্যবসায়ী সোহাগকে নির্মমভাবে হত্যার বিচার দাবিতে এবং সারাদেশে অব্যাহত আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির প্রতিবাদে নওগাঁয় বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১২ জুলাই) দুপুরের দিকে শহরের মুক্তির মোড়ে সংগ্রামী ছাত্র-জনতার ব্যানারে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ঘন্টাব্যাপী এই বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে এক র্যালী বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় মুক্তির মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এসময় ‘চাঁদাবাজের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’, “লন্ডন না ঢাকা” ‘একশন টু একশন, ‘ডাইরেক্ট একশন’ ‘যুবদলের চামড়া খুলে নিবো আমরা’ ‘জ্বালোরে জ্বালো আগুন জ্বালো’ এমন বহু শ্লোগান দিতে থাকেন ছাত্র-জনত। এদিকে এই বিক্ষোভ মিছিলে নওগাঁ মেডিকেল কলেজের কিছু শিক্ষার্থীরা একাত্মতা প্রকাশ করে যোগ দেন। তাদের হাতে লেখা ছিল “যুবদলের কি গুণ, পাথর মেরে মানুষ খুন” “চাঁদা আনলে পুরস্কার, ধরা পড়লে বহিষ্কার” “চাঁদা তুলে পল্টনে, টাকা যায় লন্ডনে” “চাঁদা লাগলে চাঁদা নে, আমার ভাইকে ফেরত দে” এবং Are we witnessing another july? সহ নানা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে শ্লোগান দিতে থাকে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা তানজিম বিন বারীর নেতৃত্বে এসময় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- ছাত্র নেতা আরমান হোসেন, সাদনান সাকিব, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) নওগাঁ জেলা শাখার সমন্বয় কমিটির সদস্য দেওয়ান মাহবুব আল হাসান সোহাগ, গণঅধিকার পরিষদের সাকিব হোসেনসহ প্রমূখ। বক্তারা বলেন, চাঁদা না দেওয়ায় প্রকাশ্যে একজন ব্যবসায়ীকে পাথর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়েছে এটি নিছক হত্যাকাণ্ড নয়, চরম বর্বরতা। এ ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে এমন নৃশংসতা চলতেই থাকবে। তাই দেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার ও প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি। এসময় বিএনপিকে হুসিয়ারি দিয়ে বক্তারা বলেন, বিগত ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট সরকারকে নামাতে আমাদের সময় লাগেনি। আপনার দলের নেতা কর্মীরা যদি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধ না করে তাহলে আপনাদের বিরুদ্ধে একশনে যেতে আমাদের সময় লাগবেনা। আবার রাস্তায় নামতে বাধ্য হবো। তারা বলেন, আওয়ামীলীগ যদি খুন, গুম ও নির্যাতনের কারনে নিষিদ্ধ হতে পারে, তাহলে বিএনপি কেন ৯মাসে দেড়’শ খুনের কারণে নিষিদ্ধ হবেনা? এছাড়া নওগাঁতে কোন প্রকার চাঁদাবাজি করতে আমরা দিবনা বলে বিএনপিকে হুঁসিয়ারি দেন বক্তারা। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বক্তারা ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকাণ্ডের দ্রুত তদন্ত ও বিচার এবং সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। উল্লেথ্য, গত ৯ জুলাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি পণ্যের ব্যবসায়ী সোহাগ নামের এক যুবককে পাথর মেরে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যুবদল নেতা মঈনসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে। এদিকে, যুবদলের নেতা রজ্জব আলী পিন্টু ও সাবাহ করিম লাকি’র আজীবন বহিষ্কারাদেশ এবং আইনি ব্যবস্থা নেয়ার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি।