মোঃ নাজমুল শেখ, মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি।
মাদারীপুরে সরকারি হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া ছয় মাসের শিশু আবদুর রহমানকে পাঁচ দিনেও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। সন্তানকে হারিয়ে উৎকণ্ঠা
আর হতাশায় দিন কাটছে মা-বাবার।
পুলিশ বলছে, শিশুটিকে উদ্ধারে সব ধরনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ
জন্য পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। গত শনিবার দুপুরে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা
হাসপাতালের ষষ্ঠ তলার শিশু ওয়ার্ড থেকে চুরি হয় আবদুর রহমান। শিশুটির বাবা সুমন মুনশি ও মা সুমি আক্তার সদর উপজেলার মহিষের চর পাকা মসজিদ এলাকার বাসিন্দা।
সুমন মুনশি বলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলে পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ। সব জায়গায় পাগলের মতো তন্নতন্ন
করে খুঁজতেছি। বারবার পুলিশের কাছে গিয়েছি, শুধু আশ্বাস পাচ্ছি। আমরা খুব ভয়ের মধ্যে আছি, আতঙ্ক আর হতাশার মধ্যে দিন কাটছে। আমার স্ত্রী খুব ভেঙে
পড়েছে। কোনো কিছুই খেতে পারছে না। ছেলেকে ফিরে পেতে দিনরাত কান্নাকাটি করে যাচ্ছে।’
শিশুটির মা সুমি আক্তার রোজই থানায় আসেন তাঁর সন্তানের খোঁজ নিতে। তিনি বলেন, ‘চোখের পলকে
এক মহিলা বোরকা পরে এসে আমার ছেলেকে কোলে নিল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সে আমার
ছেলেকে কোলে করে নিয়ে পালিয়ে যায়। আমি অনেক চিৎকার করেছি, হাসপাতাল থেকে তখন কেউ এগিয়ে আসে নাই। আমি শুধু আমার বুকের ধনকে ফেরত চাই। যেভাবেই হোক, আমি আমার
ছেলেকে চাই। সরকারের কাছে আমার একটাই দাবি- আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দিন।’
হাসপাতাল ও পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার দুপুর
সাড়ে ১২টার দিকে সুমি বড় মেয়েকে খাওয়াচ্ছিলেন।
এ সময় গোলাপি বোরকা পরা এক নারী আবদুর রহমানকে কোলে নিয়ে আদর করতে করতে
বারান্দায় যান এবং মুহূর্তেই শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে
যান। হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ওই নারী শিশুকে কোলে নিয়ে নিচে নামেন এবং দ্রুত একটি ইজিবাইকে উঠে হাসপাতাল এলাকা ত্যাগ
করেন। ঘটনার পরদিন শিশুটির বাবা থানায় মামলা করেন।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আদিল হোসেন বলেন, শিশুটিকে উদ্ধারে একাধিক
দল কাজ করছে। ইজিবাইকচালক হৃদয়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
তবে চুরি করা নারীকে এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।