মনা যশোর প্রতিনিধিঃ
ভিকটিম মোঃ সিরাজুল ইসলাম ঝিনাইদহ জেলার কোর্টচাঁদপুর থানাধীন সলেমানপুর গ্রামের বাসিন্দা। সে পেশায় একজন কাঁচামাল ব্যবসায়ী। প্রায় একমাস আগে ভিকটিমের সাথে অজ্ঞতনামা চারজন ব্যক্তির কোর্টচাঁদপুর এলাকায় পরিচয় হয় এবং তারা একপর্যায়ে ভিকটিমকে বলে তাদের নিকট বেশ কিছু সৌদি রিয়াল আছে কিন্তু এই মুহূর্তে তারা এগুলো ভাংগাতে পারছেনা।
এসময় তারা ভিকটিমকে একশত রিয়াল দেখায় এবং তাকে প্রলোভন দেখিয়ে বলে সে যদি এগুলো নিতে চায় তবে প্রতি রিয়াল ১৫/= টাকা দরে তাদের দিবে।
ভিকটিম দেখে বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী এটা অনেক অল্প মূল্য, তখন সে তাদের নিকট থেকে সব গুলো রিয়াল ক্রয় করতে রাজি হয়।
এরপর গত জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে তারা ভিকটিমের মোবাইলে কল করে এবং তাকে টাকা নিয়ে যশোর অভয়নগর থানাধীন নওয়াপাড়া বুইকারা পশু-হাসপাতালের পাশে সকালে আসতে বলে।
ভিকটিম তাদের কথামতে যথা সময়ে উক্ত স্থানে হাজির হলে প্রথমে দুই ব্যক্তি তার সাথে কথা বলতে থাকে এবং এক পর্যায়ে সেখানে আরো একজন আসে এবং একটু দূরে অন্য একজন দাড়িয়ে থাকে।
এসময় তারা ভিকটিমের সাথে চূড়ান্ত কথা বলে পাশের গলির ভিতরে নিয়ে তার নিকট থেকে নগদ চার লক্ষ টাকা নেয় এবং তাকে রিয়ালের কথা বলে কাপড়ে মোড়ানো একটা বান্ডিল দিয়ে বলে এগুলো নিয়ে নিরিবিলি কোন স্থানে গিয়ে খুলতে। এই বলে তারা মোটরসাইকেল যোগে দ্রুত ঘটনাস্থান ত্যাগ করে।
পরবর্তীতে ভিকটিম একটা নিরিবিলি স্থানে গিয়ে সেটি খুলে দেখতে পায় কিছু কাগজ দিয়ে একটি ভিম সাবান মোড়ানো। তখন ভিকটিম বুঝতে পারে সে কোন প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েছে এবং তারা পরস্পর যোগসাজসে প্রতারণা করে তার নিকট হতে নগদ অর্থ নিয়ে গেছে।
পরবর্তীতে এসংক্রান্তে ভিকটিম যশোর জেলা পুলিশের শরণাপন্ন হলে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন তদন্তে নামে এবং সাইবার ক্রাইমের এসআই(নিঃ)/ দেবব্রত ঘোষ এর নেতৃত্বে একটি টিম ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং জড়িতদের সনাক্ত পূর্বক গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করে আজ ০৮/০৭/২০২৫খ্রিঃ সকাল ০৫.০৫ ঘটিকায় খুলনা জেলার বিভিন্ন এলাকা হতে ঘটনার সাথে জড়িত চারজন আসামিকে গ্রেফতার করে।
তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এবং ১নং আসামি আব্দুল হামিদের নিকট হতে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল, চারটি সিম কার্ড, ২নং আসামি ইমদাদুল শেখের কাছ থেকে প্রতারণার ৩,৫০০/= টাকা, একটি মোবাইল ও একটি সিম কার্ড, ৩নং আসামি রাজু শেখের নিকট থেকে একটি মোবাইল, একটি সিম কার্ড এবং পলাতক আসামি জাহিদ সর্দ্দারের বসত বাড়ি হতে প্রতারণার নগদ ৮০,০০০/=টাকা, একটি মোবাইল, একটি সিম কার্ড ও একটি মোটরসাইকেল(এফজেড-ভার্সন-৩) উদ্ধার পূর্বক জব্দ করে।
পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে ১নং আসামি বিজ্ঞ আসালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।