মনা যশোর প্রতিনিধিঃ
শার্শা উপজেলার বেলতলা দেশের অন্যতম বড় আমের বাজার। এ বাজারে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ হাজার মণ আম বিক্রি হয়। টাকার অংকে সেটা ৫ থেকে ৬ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বাজারে চলে আম বেচাকেনা।
শার্শা বাগুড়ির এ বাজারে রয়েছে ৮৬টি আমের আড়ৎ। উপজেলার ১১ ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকা থেকে চাষিরা এ বাজারে আম নিয়ে আসেন। সকাল থেকে পাইকাররা ছুটে আসেনে এখানে। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখর হয়ে ওঠে পুরো বাজার।
সরেজমিনে বেলতলা বাজারে দেখা গেছে, সাতক্ষীরা-নাভারণ সড়কের দুই পাশে বসে বৃহৎ এ আমের বাজার। ব্যস্ততম সড়কে নানা ধরনের পরিবহন চলাচল করে। বাজারটি রাস্তার ওপর হওয়ায় ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে বলে ব্যবসায়ীরা জানায়।
একাধিক ব্যবসায়ী জানান, বাজারটি যদি কোনো একটি মাঠে বসানো যেতো তাহলে নিরাপদে চাষিরা আম বিক্রি করতে পারতেন। সেই সঙ্গে ব্যবসায়ীরাও ধীরে আম গুছিয়ে কার্টনে করে পরিবহন করতে পারতেন। রাস্তার ওপর প্রতিদিন শত শত ভ্যান, করিমন-নসিমনসহ নানা ধরনের ইঞ্জিনচালিত পরিবহন দাঁড় করিয়ে আম নামাতে হয়। তাতে যানজটের ও সৃষ্টি হয়।
তারা জানান, বাজারে গোপালভোগ, ক্ষীরশাপাতি, গোবিন্দভোগ, ল্যাংড়া, হিমসাগর, গোপাল খাস, বৈশাখী আম্রপালিসহ নানা জাতের আম বাজারে উঠে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পাইকাররা এসব আম কিনে করে নিয়ে যান। এছাড়া এ আম দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হয়।
বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রচার সম্পাদক মন্টু মিয়া বলেন, এখানে ফরমালিনমুক্ত আম বিক্রি হয়। কোনো ধরনের চাপ ছাড়া ব্যবসায়ীরা এখানে ব্যবসা করছে। আড়তদাররা শতকরা ৩ টাকা কমিশনে আড়তদারি নিয়ে থাকেন। বাজারের চাষিরা আম বিক্রি করে নগদ টাকা নিয়ে ঘরে ফিরেন। যাতায়াত ব্যবস্থাও ভাল থাকায় দেশের প্রায় প্রতিটি জেলার ব্যবসায়ীরা এখান থেকে আম কিনে নিয়ে যান। চাষিদের এখানে শতকরা মাত্র ৫ টাকা খাজনা দিতে হয়।
বাজার কমিটির সভাপতি মাহমুদ হোসেন বলেন, বাজারে তিন ধরনের আড়ৎ রয়েছে। এ গ্রেড, বি গ্রেড ও সি গ্রেড। এ গ্রেডের একজন আড়তদার প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার আম, বি গ্রেডের একজন আড়তদার প্রতিদিন ৬ থেকে ১০ লাখ টাকা এবং ‘সি’ গ্রেড একজন আড়তদার প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার আম বিক্রি করে থাকেন।
কমিটির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কর্পোরেট সংবাদকে বলেন, ‘৬ মে থেকে আম কেনাবেচা শুরু হয়েছে। এখন গোপালভোগ, ক্ষীরশাপাতি, গোবিন্দভোগ, হিমসাগর, গোপালখাস বিক্রি হচ্ছে। ২১ মে থেকে হিমসাগর বাজারে আসবে। আর ২৮ মে থেকে ল্যাংড়া ও ৬ জুন থেকে আম্রপালি ও মল্লিকা বাজারে আসবে।
এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাজিব হাসান কর্পোরেট সংবাদকে বলেন, ‘শার্শার বেলতলা দেশের দক্ষিণ পাশ্চিমাঞ্চলের একটি বড় আম বাজার। এ বাজার থেকে দেশের সিংহ ভাগ জেলার আমের চাহিদা মেটায়। এছাড়া এখান থেকে আম বিদেশেও রপ্তানি করা হয়।