মনা নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
গত ০৫/১০/২০২৫ খ্রিঃ দুপুর অনুমান ১২.৩০ ঘটিকার সময় ফতুল্লা থানাধীন পশ্চিম দেলপাড়া মির্জা বাড়ী মোড় সাকিনস্থ আকিল উদ্দিন এর ৫ম তলা বিল্ডিং এর ৪র্থ তলার পশ্চিম পার্শ্বের ফ্লাটের উত্তর পাশের কক্ষে মোঃ নয়ন (৪৮), পিতাঃ মোঃ আব্দুল সালাম (৭৭), মাতাঃ মোসাঃ আয়েশা বেগম, সাংঃ কানারগাঁও, থানাঃ নড়িয়া, জেলাঃ শরীয়তপুর, এ/পি সাং- পাগলা নন্দলালপুর, মসজিদ গলি, কুতুবপুর, থানা- ফতুল্লা, জেলা-নারায়ণগঞ্জকে অজ্ঞাতনামা আসামিরা হত্যা করে ফতুল্লা থানাধীন উত্তর শিয়াচর এলাকার তক্কারমাঠ সাকিনস্থ মাওয়া সুপার মার্কেটের পশ্চিম পাশে ফাঁকা জমিতে নীল রংয়ের প্লাস্টিকের ড্রামে ঢুকিয়ে মৃতদেহ (দুইটি পা ব্যতীত) ফেলে রাখে। আসামিরা ডিসিস্ট এর বিচ্ছিন্ন পা দুটি এবং হত্যা সংশ্লিষ্ট আলামত একটি তোশকের ভিতর পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় ফতুল্লা থানাধীন পিলকুনি সরকারি প্রাইমারী স্কুলের গলিতে জনৈক আশরাফ এর ফাঁকা জমির পশ্চিম পাশে ফেলে দেয়। উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনায় ডিসিস্ট মোঃ নয়ন (৪৮) এর পিতা মোঃ আব্দুল সালাম (৭৭) বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নারায়ণগঞ্জ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, পিপিএম(বার) মহোদয়ের নির্দেশনায় এই হত্যাকান্ডের ঘটনার সহিত জড়িত আসামিদের গ্রেফতারসহ ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে ফতুল্লা থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তৎপর হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) জনাব তারেক আল মেহেদী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার “ক”সার্কেল, নারায়ণগঞ্জ জনাব মোঃ হাসিনুজ্জামান মহোদয়ের তত্ত্বাবধানে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জনাব আনোয়ার হোসেন, এসআই(নিঃ) মোঃ রফিকসহ সঙ্গীয় ফোর্স সহ নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকান্ডের ঘটনার সহিত জড়িত ১। সাবিনা @ সাবরিনা (৩৮) ২। রাসেল @ ঠোঙ্গা রাসেল ৩। চয়ন (৩৮), ৪। জুয়েল (২৮), ৫। নোমান @মানিক(২৮), ৬। সুমাইয়া (২০), ৭। সানজিদা@সাজু (১৮) দের গ্রেফতার করে।
প্রাথমিকভাবে জানা যায়, ডিসিস্ট মোঃ নয়ন (৪৮) অটো গাড়ী চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। তার দুই সংসার ছিল। ১ম স্ত্রীর নাম সাহিদা বেগম (৪০) এবং ২য় স্ত্রীর নাম সাবিনা @ সাবরিনা (৩৮) । ডিসিস্ট নয়নের ২য় স্ত্রীর পূর্বের সংসারে দুই মেয়ে ছিল। তাদের নাম সুমাইয়া (২০) ও সানজিদা @ সাজু (১৮)। অনুমান ০৩ বছর পূর্বে ডিসিস্ট মোঃ নয়ন একটি মাদক মামলায় জেল হাজতে যায়। ডিসিস্ট জেল হাজতে থাকাকালীন তার ২য় স্ত্রী সাবিনা @ সাবরিনা (৩৮) আসামি রাসেল @ ঠোঙ্গা রাসেল এর সাথে পরক্রীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। গত ১৯/০৯/২০২৫ খ্রিঃ ডিসিস্ট মোঃ নয়ন (৪৮) জামিনে মুক্তি পেয়ে বাসায় থাকা অবস্থায় তার ২য় স্ত্রী সাবিনা @ সাবরিনা (৩৮) ও আসামী রাসেল @ ঠোঙ্গা রাসেলের পরক্রীয়ার বিষয়টি জানতে পারে। তার ২য় স্ত্রীকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সাবিনা @ সাবরিনা (৩৮) এর সাথে ডিসিস্ট এর মনোমালিন্য তৈরী হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক ০৫/১০/২০২৫ তারিখ বেলা অনুমান ১২.৩০ ঘটিকার সময় তার ২য় স্ত্রীর বাসায় পরক্রীয়া প্রেমিক রাসেল @ ঠোঙ্গা রাসেল (৪২) আসলে ডিসিস্ট নয়ন এর সহিত তাদের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে সাবিনা @ সাবরিনা (৩৮) ও রাসেল @ ঠোঙ্গা রাসেল ফ্ল্যাটের একটি কক্ষে নয়নকে আটকে ফেলে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে এবং উপর্যুপরি ধারালো ছোরা দিয়ে নিম্নাংশে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা নিশ্চিত করে। তার পরদিন ০৬/১০/২৫ খ্রিঃ অপরাপর সহযোগী ধৃত আসামি চয়ন (৩৮), জুয়েল (২৮), নোমান @ মানিক(২৮), সুমাইয়া (২০), সানজিদা@ সাজু (১৮) পলাতক আসামী সামির (২০) সহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনদের সহিত পারস্পরিক যোগসাজশে হত্যা কান্ডের ঘটনাটি ধামা চাপা দেওয়ার জন্য হেক্সব্লেড দিয়ে দুইটি পা বিচ্ছিন্ন করে । ডিসিস্ট এর শরীর হতে বিচ্ছিন্ন করা দুইটি পা সহ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আলামত ফতুল্লা থানাধীন পিলকুনি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের গলি জনৈক আশরাফ এর ফাঁকা জমির পাশে একটি তোশকের ভিতর পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় ফেলে রাখে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা প্রত্যেকে হত্যাকান্ডের ঘটনার বিষয়ে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করে । আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে বিজ্ঞ আদালত সুমাইয়া ও সানজিদাকে ০২(দুই) দিনের এবং বাকিদের ০৫(পাঁচ) দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।