
মোঃ নাজমুল শেখ, মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি
মাদারীপুরের রাজৈর থানায় পুলিশের হেফাজতে এক আসামিকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে থানার ওসি (তদন্ত) সঞ্জয় কুমার ঘোষসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে জেলা পুলিশ সুপারকে দ্রুত তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, রাজৈর থানার (জি.আর. ৩০২/২০২৫) মামলার এফআইআরভুক্ত আসামি ও পূর্ব সারমঙ্গল এলাকার মাজেদ খালাসীর ছেলে ইলিয়াছ খালাসী (৩৫) কে গত ১৮ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. মোস্তফা কামাল গ্রেপ্তার করেন। পরে তাঁকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতিকুল ইসলাম ভূঁইয়ার আদালতে হাজির করা হয়।
আদালতে উপস্থিত হয়ে ইলিয়াছ অভিযোগ করেন, ওসি (তদন্ত) সঞ্জয়ের নির্দেশে পুলিশ হেফাজতে তাঁকে পিস্তলের বাট দিয়ে হাতে আঘাত করা হয় এবং বুটের লাথি মারা হয়। এসময় ম্যাজিস্ট্রেট তাঁর শরীরে দৃশ্যমান জখম লক্ষ্য করেন, যা অভিযোগের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল।
বিষয়টি নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩ এর ধারা ১৩-এর অধীন অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে আদালত ওই আইনের ধারা ৪(১)(খ) অনুসারে আসামির চিকিৎসা ও জখম পরীক্ষার নির্দেশ দেন। জেলা সিভিল সার্জন ও ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃক দাখিল করা মেডিকেল রিপোর্টে ইলিয়াছ খালাসীর ওপর শারীরিক নির্যাতনের সত্যতা মেলে।
তবে আইন অনুযায়ী গ্রেপ্তারকৃত আসামির শরীরে দৃশ্যমান জখম থাকলে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা ও পরীক্ষা করানোর কথা থাকলেও তদন্তকারী কর্মকর্তা তা অনুসরণ করেননি বলে জানা গেছে।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. এমারত হোসেন খান জানান, “রাজৈর থানার ওসি (তদন্ত) সঞ্জয়সহ সংশ্লিষ্টদের সনাক্ত করে মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন, ২০১৩ এর অধীনে মামলা রুজু করে সুষ্ঠু তদন্ত শেষে জেলা পুলিশ সুপারকে প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার নাইমুল রহমান বলেন, “বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।”