বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা:
দেশজুড়ে তীব্র বিতর্ক এবং আন্তর্জাতিক চাপের মুখে এক নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেনাবাহিনী। জাতীয়তাবাদী নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ নেতাদের কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক প্রোটোকল না দেওয়ার অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে সশস্ত্র বাহিনী। সেনাবাহিনীর উচ্চপর্যায়ের সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে এনসিপি নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ছিনতাই এবং চাঁদাবাজির মতো অসংখ্য গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে গোপালগঞ্জে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। অভিযোগ রয়েছে, কেন্দ্রীয় এনসিপি নেতাদের বাঁচাতে গিয়ে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে যে অভিযান চালানো হয়, যা পরবর্তীতে গণহত্যায় রূপ নেয়। এই ঘটনার পর থেকেই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এবং বিভিন্ন প্রভাবশালী দেশ সরকারের ওপর তীব্র চাপ সৃষ্টি করে।
সেনাবাহিনীর একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে, “এনসিপি নেতাদের কর্মকাণ্ড এবং এর ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ করেছে। গোপালগঞ্জের ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলে আমাদের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে সেনাবাহিনী কোনো দুর্নীতিগ্রস্ত বা বিতর্কিত রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সহযোগী হিসেবে পরিচিত হতে পারে না।”
সূত্রটি আরও জানায়, এই সিদ্ধান্তটি বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ে দীর্ঘ আলোচনার পর নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে এনসিপি নেতারা রাষ্ট্রীয় কোনো অনুষ্ঠানে বা ব্যক্তিগত চলাফেরার ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর প্রোটোকল, নিরাপত্তা বা আনুষ্ঠানিক কোনো সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। এটিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এনসিপির সঙ্গে দূরত্ব তৈরির একটি স্পষ্ট বার্তা হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সেনাবাহিনীর এই পদক্ষেপ দেশের রাজনীতিতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে। এতদিন ধরে এনসিপি নেতারা যে ধরনের রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা ও সুযোগ ভোগ করে আসছিলেন, তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের রাজনৈতিক প্রভাব এবং ক্ষমতার দাপট অনেকটাই কমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে, এই সিদ্ধান্ত দুর্নীতির বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর কঠোর অবস্থানকেও প্রকাশ করল।
সেনাবাহিনীর সিদ্ধান্ত