স্টাফ রিপোর্টার
হাসিনুজ্জামান মিন্টু
দিনাজপুরের আমবাড়ি এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস পুকুরে পড়ে গুরুতর দুর্ঘটনা ঘটে। এতে গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ও সংসদ সদস্য প্রার্থী ফারুক হাসানসহ বহু যাত্রী আহত হয়েছেন।
দিনাজপুর জেলার আমবাড়ি এলাকায় ঘটে গেছে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা। রবিবার (২৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হেরিটেজ এক্সপ্রেস নামের একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক থেকে ছিটকে পড়ে পাশের একটি পুকুরে। এই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ও ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ফারুক হাসানসহ আরও অনেকে।
দুর্ঘটনার খবর নিশ্চিত করেছেন ফারুক হাসান নিজেই। তিনি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, “দিনাজপুর জেলার আমবাড়ি এলাকায় আমাদের বহনকারী হেরিটেজ এক্সপ্রেসের গাড়ি ভয়াবহ এক্সিডেন্ট করেছে, দোয়া করুন।” এরপর আরেকটি পোস্টে তিনি জানান, দুর্ঘটনায় আহত সবাইকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে এবং সেখানে চিকিৎসা চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সকাল বেলায় দ্রুতগামী এই বাসটি হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারায়। মুহূর্তের মধ্যেই বাসটি রাস্তা থেকে ছিটকে গিয়ে পুকুরে পড়ে যায়। যাত্রীরা চিৎকার শুরু করলে স্থানীয় মানুষজন ছুটে এসে উদ্ধারে অংশ নেয়। দ্রুত পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে এবং আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ সময় এলাকার পরিবেশ আতঙ্কিত হয়ে ওঠে।
এখনও পর্যন্ত সঠিকভাবে জানা যায়নি কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চালকের অসাবধানতা বা বাসটির যান্ত্রিক ত্রুটি এর পেছনে দায়ী হতে পারে। অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ ড্রাইভিংয়ের কারণে চালক ক্লান্ত হয়ে পড়েন, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ায়। অন্যদিকে পুরনো গাড়ির যান্ত্রিক সমস্যা বা ব্রেকফেলও বড় দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের একজন চিকিৎসক জানান, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলেও চিকিৎসক দল দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছেন। আহত ফারুক হাসানকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে এবং তিনি শঙ্কামুক্ত আছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার সঠিক কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলছে। এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নিয়মিত গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা, চালকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি।
দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও অঞ্চলের সাধারণ মানুষের মধ্যে এ ঘটনায় ব্যাপক উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। যাত্রীরা নিরাপদে বাড়ি ফিরতে না পারা এখন বড় একটি প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনীতিক ও সাধারণ মানুষ উভয়েরই দাবি, সরকারের উচিত সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এ ধরনের দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে গেছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও যাত্রীবাহী বাস বা ট্রাক উল্টে গিয়ে প্রাণহানি ঘটছে কিংবা বহু মানুষ আহত হচ্ছে। জনদুর্ভোগ কমাতে ও মানুষের জীবন বাঁচাতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।