1. fakiraual842@gmail.com : নব দিগন্ত ২৪ : নব দিগন্ত ২৪
  2. rmriyad150@gmail.com : fokir :
  3. nobodigonto24.khag.dist.repse@gmail.com : Md. Mobinul Islam : Md. Mobinul Islam
বালু ব্যবসায়ীদের থাবায় অস্তিত্ব সংকটে নদী: নীরব প্রশাসন - নব দিগন্ত ২৪
বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ১২:০২ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
মতিঝিলে বেপরোয়া গতিতে চালিত অটোরিকশার ধাক্কায় পুলিশ সদস্য আহত; চালকের এক মাসের কারাদণ্ড রোড ক্র্যাশ তদন্তে দক্ষতা বৃদ্ধিতে ডিএমপির দুইদিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন ঠাকুরগাঁওয়ে হরিপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৮ বছরে এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু। খুলনা শহরে মৃত্যু গরুর মাংস সরবহাকারী দুই জন গ্ৰেফতার রাজধানী হতে চুরি হওয়া ক্যাভার্ড ভ্যান সিলেটের জৈন্তাপুর থেকে উদ্ধারসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে ওয়ারী থানা পুলিশ চৌহালী ফাঁড়ির ইনচার্জ গাজী মিজানের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিক্রিয়া খুলনার কয়রায় গাছ থেকে অজগর উদ্ধার, অবমুক্ত করা হলো সুন্দরবনে সাইবার অপরাধ তদন্তে সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সিটিটিসির তিনদিন ব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধন সলঙ্গা থানা জাতীয়তাবাদী পল্লী চিকিৎসক কমিটি গঠন লুটপাট থেমে নেই খুলনা অঞ্চলের সুন্দরবনে

বালু ব্যবসায়ীদের থাবায় অস্তিত্ব সংকটে নদী: নীরব প্রশাসন

মামুন
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫
  • ২ বার পড়া হয়েছে

মোঃমামুন (ডিমলা) নীলফামারী প্রতিনিধি

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তা, বুড়ি তিস্তা, কুমলাই, নাউতারা সহ একাধিক নদ-নদী বর্তমানে বালু ও মাটিখেকোদের আগ্রাসনে অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। প্রতিদিন অনিয়ন্ত্রিতভাবে নদী থেকে বালু ও মাটি উত্তোলনের ফলে নদীর তলদেশ ভেঙে যাচ্ছে, নাব্য কমে যাচ্ছে এবং নদীর তীর ধসে পড়ছে। সরকার অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে বিভিন্ন সময়ে পদক্ষেপ নিলেও স্থানীয় প্রশাসন এক্ষেত্রে অনেকটাই নীরব বলে অভিযোগ উঠেছে।

শুষ্ক মৌসুমে এসব নদ-নদীর পানি শুকিয়ে চর জেগে উঠলে একশ্রেণির প্রভাবশালী মহল অবৈধভাবে বালু ও মাটি কাটতে শুরু করে। এলাকাভিত্তিক আধিপত্য বিস্তার করে লাখ লাখ টাকার বালু বাণিজ্য চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই অবৈধ বালু তোলার পেছনে একটি শক্তিশালী চক্র জড়িত, যার মধ্যে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা রয়েছেন। তারা অবৈধ বালু তোলার মাধ্যমে আর্থিকভাবে লাভবান হলেও সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব এবং নদী হারাচ্ছে তার নাব্য।

ইজারাদারদের তথ্যমতে, উপজেলার তিস্তা, বুড়ি তিস্তা ও নাউতারা নদীর বিভিন্ন ঘাট থেকে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক্টর দিয়ে লক্ষাধিক টাকার বালু অবৈধভাবে উত্তোলন করছে এই চক্রটি। নদী তীরের মানুষের অভিযোগ, প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করেই চলছে এই রমরমা ব্যবসা। তারা বলছেন, স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন নদীর পাড়ে এসে টাকা নিয়ে যায়, আর রাজনৈতিক দলের কিছু স্থানীয় নেতা পাহারা দেন।

ডিমলার নাউতারা ইউনিয়নের পূর্ব সাতজান মোঃফিরোজ চৌধুরী পিতা আতিয়ার চৌধুরী শালহাটি বাজার, সাদ্দাম হোসেন,শফিকুল ইসলাম,আলম মিয়া পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের পাগলপাড়া, টেপাখড়িবাড়ী তেলির বাজার, তিস্তা বাজার, খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ছোটখাতা গ্রোয়িং (তিস্তা নদী), সদর ইউনিয়নের নটাবাড়ী (বুড়ি তিস্তা নদী) এবং গয়াবাড়ী ইউনিয়নের কুমলাই নদী ঘুরে দেখা গেছে, গ্রামীণ জনপদের ভেতর দিয়ে একের পর এক ট্রাক্টর নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে এভাবে বালু ও মাটি উত্তোলন করে এলাকার প্রভাবশালীসহ এই চক্রটি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এলাকার প্রভাবশালীর নির্দেশে নদীর পাড় থেকে বালু ও মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে অসাধু চক্রটি। ভয়ে কেউ কথা বলতে পারছে না। প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে। বালু উত্তোলনের ফলে প্রতিনিয়ত ভাঙছে নদীর তীর, পরিবর্তন হচ্ছে গতিপথ, নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য এবং ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ। স্থানীয়রা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ভয়ে কেউ বাধা দিতে সাহস পাচ্ছে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করে বলেন, কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ বালু ও মাটি উত্তোলন। এই বালু দিয়ে বাড়ি, রাস্তাসহ বিভিন্ন ভরাটের ব্যবসা করছে এই চক্রটি। নাউতারা নদীর সাতজান এলাকায় গভীর করে মাটি কাটা ও বালু উত্তোলনের ফলে প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে এর খেসারত দিতে হয় নদী ধারের জমির মালিকদের। ক্ষতি হয় ফসলি জমির, অনেক গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

ওসমান গনি নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “গুটিকয়েক লোকের স্বার্থ হাসিলের জন্য অথবা ব্যক্তিগত লাভবান হওয়ার জন্য এভাবে সর্বনাশ মেনে নেওয়া যায় না। এ ক্ষতি রোধ করতে হবে। অবিলম্বে এই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কেউ এই চক্রের সঙ্গে জড়িত থেকে সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে কি না, সেটা তদন্ত করে বের করতে হবে।”

গোলজার হোসেন ও জয়নাল আবেদীন নামে ঠিকাদার জানান, ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ থেকে ইজারা নিয়ে তিনি বিপাকে পড়েছেন। কারণ অবৈধভাবে যারা বালু তুলছে, তারা কম দামে বিক্রি করছে। ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে বৈধ ইজারাদারদের। এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে কেউ ইজারা নেবে না এবং সরকারের ঘরে রাজস্বও বন্ধ হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, অবৈধ বালু ও মাটি উত্তোলন বন্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সম্প্রতি কার্যকর হওয়া বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) আইন, ২০২৩ অনুযায়ী এ ধরনের অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদণ্ড এবং দশ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ২০১০ সালের মূল আইনের এই সংশোধিত সংস্করণটি পরিবেশগত ক্ষতি প্রতিরোধ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় সরকারের কঠোর অবস্থানেরই ইঙ্গিত বহন করে। এছাড়া ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এক যুগান্তকারী রায়ে ঘোষণা করে যে, বাংলাদেশের সকল নদী একটি “আইনি সত্তা” (legal entity) হিসেবে গণ্য হবে। এর ফলে নদীগুলো ব্যক্তির মতো আইনি অধিকার লাভ করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইমরানুজ্জামান জানান, “যারা অবৈধভাবে বালু বা মাটি উত্তোলন করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।”

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© নব দিগন্ত ২৪
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট