মনা যশোর প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এর নির্দেশে ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যশোর-১ (শার্শা) আসনে বাড়তে শুরু করেছে রাজনৈতিক উত্তাপ। দীর্ঘদিন পর ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায় সবার মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে।
মনোনয়ন প্রত্যারর শীরা প্রতিটি ইউনিয়ন, পৌরসভা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সমাবেশ মিছিল মিটিংসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরগরম হয়ে আছেন। দলের পক্ষ থেকেও প্রায় প্রতিদিন প্রতিটি ইউনিয়ন এবং পৌর ওয়ার্ড পর্যায় বিএনপি’র নানা কর্মসূচি চলমান রয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার(৯ আগষ্ট/২০২৫) বিকাল ৩ টায় এ উপলক্ষে বেনাপোল পৌর বিএনপি’র উদ্যোগে ওয়ার্ড কমিটি’র কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বেনাপোলের ঐতিহ্যবাহী পৌর বিয়ে বাড়ী কমিউনিটি সেন্টারে এই সভা-সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন,বেনাপোল পৌর বিএনপি’র সভাপতি-মো.নাজিম উদ্দিন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-মো.দেলোয়ার হোসেন খান(সাধারণ সম্পাদক,যশোর জেলা বিএনপি)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন-মো.আবু তাহের ভারত(সাধারণ সম্পাদক,বেনাপোল পৌর বিএনপি)।
বিশেষ অতিথিবর্গের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-শহিদুল বারী রবু(সাংগঠনিক সম্পাদক,যশোর জেলা বিএনপি), মো.নুরুজ্জামান লিটন(সাধারণ সম্পাদক,শার্শা উপজেলা বিএনপি),মো.মফিকুল হাসান তৃপ্তি(৮৫,যশোর-১শার্শা’র সাবেক সাংসদ ও কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সাবেক দপ্তর সম্পাদক)।
৯টি ওয়ার্ড থেকে আগত বিএনপি’র নেতা-কর্মীদেরকে ফুল দিয়ে কমিউনিটি সেন্টারে প্রবেশ করানো হয়। আগত কর্মীদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন,পৌর শাখার সভাপতি-মো.নাজিম উদ্দিন,সহঃ সভাপতি-এ কে এম আতিকুজ্জামান সনি এবং সাধারণ সম্পাদক-মো.আবু তাহের ভারত।
সময় সুচি অনুযায়ী বেলা ৩ টা থেকে বেনাপোল পৌর এলাকার ৯ টি ওয়ার্ড থেকে স্বতস্ফূর্তভাবে আসতে থাকেন বিএনপি নেতা-কর্মীবৃন্দ। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে কমিউনিটি কমপ্লেক্স ভবন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-মাসুদুর রহমান মিলন(সহ: সভাপতি,বেনাপোল পৌর বিএনপি),নাসিমুল গনি বল্টু(সহঃ সভাপতি,বেনাপোল পৌর বিএনপি),শাহাবুদ্দিন(সহঃসভাপতি),ইদ্রিস মালেক(সহঃসভাপতি,পৌর বিএনপি),মো.মেহেরুল্লাহ(যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক,বেনাপোল পৌর বিএনপি).
রোকসানা পারভিন রোপা(পরিবার বিষয়ক সম্পাদক,বেনাপোল পৌর শাখা),মো. আব্দুল আহাদ(সাংগঠনিক সম্পাদক-১, বেনাপোল পৌর বিএনপি),মো.আক্তারুজ্জামান আক্তার(সাংগঠনিক সম্পাদক-২),মফিজুর রহমান বাবু(আহবায়ক,বেনাপোল পৌর যুবদল),রায়হানুজ্জামান দিপু(সদস্য সচিব,বেনাপোল পৌরযুবদল),মো.শহিদুল ইসলাম শহীদ(আহবায়ক,বেনাপোল পৌর স্বেচ্ছাসেবকদল),
মো. ওমর ফারুক(সদস্য সচিব,বেনাপোল পৌর স্বেচ্ছাসেবকদল),মো.জাহাঙ্গীর হোসেন(যুগ্ম-আহবায়ক,বেনাপোল পৌর স্বেচ্ছাসেবকদল).মো.হাসান ইমাম(ভারপ্রাপ্ত সভাপতি,বেনাপোল পৌর কৃষকদল),মো.জামাল উদ্দিন(সাধারণ সম্পাদক,বেনাপোল পৌর কৃষকদল),
মো.আরিফুল ইসলাম আরিফ(আহবায়ক,বেনাপোল পৌরছাত্রদল),মো.ইশতিয়াক আহম্মেদ শাওন(সদস্য সচিব,বেনাপোল পৌর ছাত্রদল),মো.আলিফ হোসেন(আহবায়ক,ছাত্রদল বেনাপোল ডিগ্রি কলেজ), মো.রাসেল রানা(সদস্য সচিব, বেনাপোল ডিগ্রি কলেজ)।
বিএনপি নেতা-আমিরুল ইসলাম বাবু(সাদীপুর),রেজাউল করিম রেজা(সাধারণ সম্পাদক,বেনাপোল বাজার কমিটি), ব্যবসায়ী),শাহাদুর রহমান খোকন(মাছ ব্যবসায়ী),হযরত আলী(সাধারণ সম্পাদক,বেনাপোল কাঁচা বাজার কমিটি)।
এছাড়াও বেনাপোল পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ সহ সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পবিত্র কোরআন তেলোয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের কর্মসূচি শুরু করা হয়। অনুষ্ঠান শুরুতে পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক এবং নেতা-নেতৃবৃন্দ তাদের নিজ নিজ এলাকার সুবিধা-অসুবিধা এবং বিএনপি’র বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কর্মীসভায় উপস্থাপণ করেন।
দিকনির্দেশনা দিতে গিয়ে প্রধান অতিথি দেলোয়ার হোসেন খান তার বক্তৃতায় বলেন, “ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এদিক ওদিক কান না দিয়ে নিজেদেরকে প্রস্তুত করুণ। মনে রাখবেন,গত তিন তিনটি নির্বাচন ফ্যাসিস্ট সরকার যেভাবে দিনের ভোট রাতে করেছে এবার কিন্তু তা হবার কোন সুযোগ নেই। আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে চায়।
সুষ্ঠু একটি নির্বাচনের জন্য গত ১৭ বছর ধরে আন্দোলন করেছি, রক্ত ঝরিয়েছি, জেল জুলুমের শিকার হয়েছি। জনগণ বিএনপিকে ভালো বাসে বলেই সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে তিন তিনবার দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছিল। চতূর্থবারের মত আমরা আবারও ক্ষমতায় আসতে চায়। সেক্ষেত্রে আমাদেরকে পৌর এলাকার প্রতি ওয়ার্ডে ডোর টু ডোর যেতে হবে, ভোটারদের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে কথা বলতে হবে”।
বিশেষ অতিথি মো.নুরুজ্জামান লিটন বলেন, “বেনাপোল পৌর এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে বিএনপি’র নেতা-কর্মী রয়েছে,প্রয়োজনে তাদের সহায়তা নিতে হবে।
আওয়ামী লীগ ১৭ বছর ধরে স্বৈরাচারী কায়েম করেছে, যে কারণে মুষ্টিমেয় যে কয়জন আওয়ামী লীগ করেছে তারা কিন্তু আওয়ামী লীগ কি জিনিস তাও জানতে পারেনি। অতএব আমরা ঐ রাজনীতি সমর্থন করি না।
আমরা শহীদ জিয়ার আদর্শ বুকে নিয়ে রাজনীতি করি। আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট এর যে সমস্ত লোক পৌর প্রশাসনের ক্ষমতায় ছিল,তারা সরকারী টাকা আত্মৎসাত করে নিজেদের আখের গুছিয়েছে,সরকারী উন্নয়ণ কর্মকান্ড থেকে বঞ্চিত করে রেখেছিল পৌরবাসীকে। তাদের তথাকথিত দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন চোখে পড়ে না।
বেনাপোলবাসীর প্রত্যাশিত সকল কর্মকান্ড আমরা বাস্তবায়ন করতে চায়। সে ক্ষেত্রে নির্বাচনের আগ পর্যন্ত সকল নেতা-কর্মীকে সাংগঠনিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করার আহবান জানানো হয়। চাল,ডাল বিতরণ কিংবা এলাকায় যে কোন বিচার-শালিশ থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীদেরকে বিরত থাকার জন্য কঠোর হুসিয়ারী প্রদান করেন”।
অপরদিকে,মো. মফিকুল হাসান তৃপ্তি বলেন, “একাত্তরে যারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল তারা আবার সক্রিয় হয়েছে। এরা এখনো ধর্মের নামে ব্যাবসা করে যাচ্ছে। ধর্মের দোহায় দিয়ে ভোট চাইছে তারা,তাই আমাদের মা বোনদের সাবধান হতে হবে, এরা যেন পাড়ায় পাড়ায় ঢুকে ধর্মের নামে মগজ ধোলাই করে তাদের পথে না নিয়ে যায় সেদিকে সকল বিএনপি নেতা-কর্মীকে সতর্ক থাকতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি সুন্দর দেশে পরিণত হবে আগামী দিনে। ৩১ দফা বাস্তবায়নে শহর থেকে গ্রাম পর্যায়ে আমরা কাজ করছি। যাতে করে মানুষ আগামী দিনে বিএনপিকে ভোট দিয়ে দেশ সেবা করার সুযোগ করে দেয়।
এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দেশের ভবিষ্যৎ রক্ষায় আমরা ঐক্যবদ্ধ। আগামী সংসদ নির্বাচন অতি সন্নিকটে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে হলে সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে একসাথে কাজ করতে হবে”।
অনুষ্ঠান সঞ্চালণকারী,বেনাপোল পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মো.আবু তাহের ভারত তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন,”গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দেশের ভবিষ্যৎ রক্ষায় আমরা ঐক্যবদ্ধ।
আগামী সংসদ নির্বাচন অতি সন্নিকটে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে হলে সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে একসাথে কাজ করতে হবে”।