পটুয়াখালীর দুমকিতে বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে মোঃ আঃ কাদের (১৯) নামে এক যুবককে কুপিয়ে জখমের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে রাতে থানা থেকেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে একজন প্রভাবশালী আসামিকে—এ নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন।
গত শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের চরবয়েড়া গ্রামের হোচেন মৃধার ছেলে আঃ কাদের স্থানীয় বোর্ড অফিস ব্রিজের পশ্চিম পাশে আল আমিনের চায়ের দোকানে বসা ছিলেন। এমন সময় প্রতিপক্ষ গ্রুপের হাসিব ও আনোয়ারের নেতৃত্বে ৫-৬ কিশোর দেশীয় অস্ত্র—চাকু, খুড়, চাপাতি নিয়ে আক্রমণ চালায়। এলোপাথাড়ি কোপে গুরুতর জখম হন আঃ কাদের।
ঘটনার সূত্রপাত হয়, মোঃ ইফাদ নামের এক কিশোর বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালিয়ে মোঃ আল আমিন কাজীর সঙ্গে ধাক্কা লাগার পরদিন, আঃ কাদের জিজ্ঞেস করলে তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে পরিকল্পিত হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ।
আহত অবস্থায় স্থানীয়রা কাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে দুমকি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহতের মা সেলিনা বেগম বাদী হয়ে দুমকি থানায় ৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর অনুযায়ী, গ্রেফতার হওয়া আসামিরা হলেন—৩ নম্বর আসামি মোঃ মনির মাষ্টার (মুরাদিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, আওয়ামী লীগের সদস্য) ও ৪ নম্বর আসামি মহিবুল্লাহ।
রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বোর্ড অফিস বাজার থেকে মনির মাষ্টার ও মহিবুল্লাহকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে অভিযোগ উঠেছে, গ্রেফতারের পর আদালতে পাঠানো হয়নি মনির মাষ্টারকে। বরং রাতেই থানার মধ্য থেকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়, যা স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্য ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাকির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “মামলার এজাহারভুক্ত ৩ ও ৪ নম্বর আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে। এবং বাদীর জিম্মায় ৩ নম্বর আসামি মোঃ মনির মাষ্টারকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান।
এদিকে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, কুপিয়ে আহত করার ঘটনার পর মনির মাষ্টার বোর্ড অফিস বাজারে মিষ্টি বিতরণ করে ‘আনন্দ প্রকাশ’ করেন—এ ঘটনায় রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর অভিযোগও উঠছে।
এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। আহত কাদেরের পরিবার দ্রুত বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।